শনিবার, ১৫ জুন ২০২৪

সোমবার আসছেন কাতারের আমির

কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি।
ছবি: সংগৃহীত
প্রকাশিত
ছবি: সংগৃহীত
প্রকাশিত : ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ ২২:৩০

দুই দিনের সফরে ঢাকা আসছেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি। আগামী ২২ এপ্রিল সোমবার তিনি ঢাকায় পৌঁছবেন।

ঢাকায় এটি তাঁর প্রথম সফর। সফরে দুই দেশের মধ্যে জ্বালানি খাতে সহযোগিতার পাশাপাশি দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি ও ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের বিষয় গুরুত্ব পাবে।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, কাতারের আমিরের এই সফরে ১০টি চুক্তি এবং সমঝোতা স্মারক সই হবে। এই চুক্তিগুলোর মধ্যে রয়েছে ব্যবসা ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি, বন্দি বিনিময়, দ্বৈত কর প্রত্যাহার ও শুল্ক বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতা।

সমঝোতা স্মারকের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ থেকে কাতারে জনশক্তি রপ্তানি, ধর্মীয় বিষয়ে সহযোগিতা, বন্দর ব্যবস্থাপনায় কাতারের প্রতিষ্ঠান মাওয়ানির যুক্ত হওয়া, উচ্চশিক্ষায় সহযোগিতা ও কূটনীতিকদের প্রশিক্ষণ।

জানা গেছে, ইরান-ইসরায়েলের সাম্প্রতিক সংঘাতের এই সময়ে কাতারের আমিরের এই সফরে আলোচনায় গুরুত্ব পাবে মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি।

প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালে কাতারের তৎকালীন আমির শেখ হামাদ বিন খলিফা আল থানি বাংলাদেশে এসেছিলেন। এর প্রায় দুই দশক পর তার ছেলে ও বর্তমান আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি বাংলাদেশে আসছেন। নাম প্রকাশ না করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কূটনীতিক জানান, ২০১৭ সালে আরব লিগ, বিশেষ করে সৌদি আরবের নেতৃত্বে মধ্যপ্রাচ্য ও আরব দেশগুলোর সঙ্গে কাতারের সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটেছিল। ওই সময় কাতারের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ার জন্য বাংলাদেশের ওপর সৌদি আরবের প্রবল চাপ ছিল। তখন বাংলাদেশ নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছিল। কারণ, বাংলাদেশের জনশক্তির প্রধান বাজার সৌদি আরব হলেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মী কাতারে কাজ করেন। ফলে

২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ওই সংকটে বাংলাদেশ কাতারের পাশে ছিল। ফলে দেশটি বাংলাদেশের ওপর সন্তুষ্ট।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির আসন্ন সফর উপলক্ষে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে দুই পক্ষের কূটনীতিকরা কাজ করছেন। তার আসন্ন সফরকে সামনে রেখে গত সোমবার দোহা থেকে একটি অগ্রবর্তী দল ঢাকায় এসেছে। তারা আমিরের সফর উপলক্ষে নিরাপত্তাসহ সার্বিক বিষয়ে খোঁজ-খবর নেন এবং গত মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বৈঠক করেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, কাতারের বন্দর ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান মাওয়ানি কাতার চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনায় আগ্রহী। এখন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ তাদের প্রস্তাবে রাজি হলে কাতারের আমিরের ঢাকা সফরের সময় এ বিষয়ে ঘোষণা আসতে পারে।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের মার্চে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশ প্রতিরক্ষা সহযোগিতার একটি সমঝোতা স্মারক সই করেছে। এটি এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। দেশটির আমিরের ঢাকা সফরে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়টি আলোচনায় আসতে পারে। ওই সমঝোতা স্মারকের আলোকে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের কাতারে কাজ করার কথা রয়েছে। এই মুহূর্তে কাতারের নৌবাহিনীর সঙ্গে বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের একটি সমঝোতা স্মারক রয়েছে। এর আওতায় কোস্টগার্ডের লোকজন কাতারে কাজ করছেন।

ঢাকায় সড়ক ও পার্কের নামকরণ হবে কাতারের আমিরের নামে

এদিকে বাসস জানিয়েছে, কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির নামে রাজধানী ঢাকায় একটি সড়ক ও পার্কের নামকরণ করা হচ্ছে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতাধীন মিরপুরের কালশী এলাকায় বালুর মাঠে নির্মিতব্য পার্ক ও মিরপুর ইসিবি চত্বর থেকে কালশী উড়াল সেতু পর্যন্ত সড়কটি কাতারের আমিরের নামে নামকরণ করা হবে। আগামী মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির এই দুটি স্থাপনা উদ্বোধনের কথা রয়েছে।

এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, কাতার বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত বন্ধু রাষ্ট্র। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে দু-দেশের মধ্যে চমৎকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান। দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বের এই সম্পর্ক এবং আমিরের এই সফরকে স্মরণীয় করে রাখার লক্ষ্যে তাঁর নামে এই পার্ক ও রাস্তার নামকরণ করা হচ্ছে।

এ সময় তিনি তুরস্কের জাতির পিতা কামাল আতাতুর্কের কথা উল্লেখ করে বলেন, দুই দেশের বন্ধুত্বের নিদর্শন স্বরূপ কামাল আতাতুর্কের নামে রাজধানীর বনানীতে একটি সড়ক রয়েছে। আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামেও তুরস্কে একটি সড়কের নামকরণ করা হয়েছে।

মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, গত বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক জনসভায় কালশী এলাকার বালুর মাঠে বিনোদন পার্ক ও খেলার মাঠ করার ঘোষণা দেন। তিনি ওই এলাকার মানুষের জন্য উপহার হিসেবে ১৬ বিঘা জমি খেলার মাঠ ও পার্কের জন্য বরাদ্দ দেন।

সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম জানান, মাঠ ও বিনোদন পার্কটিতে যুবকদের জন্য ক্রিকেট ও ফুটবল খেলার ব্যবস্থা এবং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে। প্রবীণদের জন্য হাঁটার ব্যবস্থা এবং শিশুদের খেলাধুলার জায়গা থাকবে।


ঈদ যাত্রায় সড়কে ভোগান্তি, সময় মতো যাচ্ছে ট্রেন

প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ পালন করতে ঘরমুখো মানুষ। ছবি: সৈয়দ মাহামুদুর রহমান
আপডেটেড ১৫ জুন, ২০২৪ ০০:১৮
নিজস্ব প্রতিবেদক

আর মাত্র এক দিন পরেই পালিত হবে মুসলমানদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। তাই পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে নাড়ির টানে রাজধানী ছেড়ে বাড়ি ফিরছে লাখ লাখ মানুষ।

শেষ মুহূর্তের ভিড় আর দুর্ভোগ এড়াতে বৃহস্পতিবার থেকেই অনেকে ঢাকা ছাড়তে শুরু করলেও গতকাল শুক্রবার থেকে ছুটি শুরু হওয়ায় এদিন সকাল থেকেই সড়ক ও রেলপথে ঘরমুখো মানুষের ঢল নামে। আর স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে যানবাহনের চাপ বেড়ে যাওয়ায় গতকাল ভোর থেকেই বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব প্রান্তে, পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে ঘরমুখো মানুষের কর্ম ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

তবে আগের দুই দিনের তুলনায় গতকাল কমলাপুর রেলস্টেশনেও যাত্রীদের ভিড় বেশি দেখা গেছে। তবে নেই ট্রেনের বিলম্ব যাত্রা, নির্দিষ্ট সময়ে ছেড়ে যাচ্ছে ট্রেন। গত কয়েক দিনের তুলনায় আবহাওয়া ঠাণ্ডা থাকায় সব মিলিয়ে ট্রেনে আজকের ঈদযাত্রা স্বস্তির বার্তা দিচ্ছে। তবে শুধু তিতাস কমিউটার ট্রেনটি দেড় ঘণ্টা বিলম্বে স্টেশন ছেড়েছে।

এর আগে ঈদযাত্রার প্রথম দিন বুধবার একাধিক ট্রেন বিলম্বে ছাড়ার ঘটনায় বেশ ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছিল যাত্রীদের৷ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নির্দিষ্ট সময়ে ট্রেন ছেড়ে গেলেও বিকেলে কয়েকটি ট্রেন বিলম্বে ছাড়ে।

গতকাল সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত কমলাপুর রেলস্টেশন এলাকা থেকে মোট ১১টি ট্রেন ছেড়ে গেছে। সবকটি ট্রেন নির্দিষ্ট সময়ে স্টেশন ছেড়েছে। সময়মতো ট্রেন ছাড়ায় স্বস্তি ফিরেছে যাত্রীদের মধ্যে।

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার জানান, আজকে সব ট্রেনই সময়মতো স্টেশন ছেড়ে গেছে। কোনো ট্রেনই বিলম্বে যাত্রা করেনি। নির্বিঘ্নে ও নিরাপদে যাত্রীরা বাড়ি ফিরতে পারছে।

এদিকে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্বপ্রান্ত থেকে টাঙ্গাইলের রাবনা বাইপাস পর্যন্ত ২০ কিলোমিটারজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। পুলিশ ও পরিবহন শ্রমিকরা জানান, অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ, কয়েকটি ছোটখাটো দুর্ঘটনা ও চালকরা বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোর কারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাজেদুর রহমান বলেন, ‘ভোরে কালিহাতী উপজেলার পৌলীতে সিমেন্টবোঝাই একটি ট্রাক রাস্তার ওপর উল্টে গেলে পরিস্থিতির অবনতি হয়। এ ছাড়া গাড়িগুলো সার্ভিস লেন ব্যবহারের কারণে সমস্যা আরও বেড়ে যায়। তবে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে কাজ করছে পুলিশ। দ্রুততম সময়ের মধ্যে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’

স্বাভাবিক সময়ে বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে উত্তরের ১৬টিসহ মোট ২১টি জেলার প্রায় ১২ থেকে ১৫ হাজার যানবাহন চলাচল করে; কিন্তু ঈদের সময় এই সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এতে বিপুল সংখ্যক গাড়ি এক সঙ্গে সেতু পার হতে গিয়ে বাধে বিপত্তি। সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজটের।

এদিকে এক দিনে বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে ৩ কোটি ২১ লাখ ৯৭ হাজার ৩০০ টাকা টোল আদায় করেছে সেতু কর্তৃপক্ষ এবং এর বিপরীত ৪০ হাজার ৯০৬ টি যানবাহন পারাপার হয়। তার মধ্যে কোরবানি পশু ও পণ্যবাহী পরিবহন বেশি পারাপার হয়েছে।

গতকাল সকালে বঙ্গবন্ধু সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, বুধবার রাত ১২টা থেকে বৃহস্পতিবার রাত ১২টা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে ৩ কোটি ২১ লাখ ৯৭ হাজার ৩০০ টাকা টোল আদায় করেছে সেতু এবং এর বিপরীত ৪০ হাজার ৯০৬টি যানবাহন পারাপার হয়েছে।

দক্ষিণাঞ্চলের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত পদ্মা সেতুর মাওয়া দিয়েও ঘরমুখো মানুষের ঢল নামে। ফলে মাওয়া টোল প্লাজা থেকে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়।

পদ্মা সেতুতে যানবাহনের লাইন মাওয়া টোল প্লাজা থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে শ্রীনগর ছাড়িয়ে গেছে। সেতুর টোল প্লাজার মোটরসাইকেল বুথ ছাড়াও ৭টি বুথে টোল নিয়েও কুলিয়ে উঠতে পারছেন না দায়িত্ববানরা।

ট্রাফিক ইন্সপেক্টর জিয়াউল ইসলাম জানান, সেতুর মাওয়া প্রান্তের ওজন স্টেশনের লোকজনের অবহেলার কারণে অনেক ট্রাক জমে মূল রাস্তা বন্ধ হয়ে যানজটে কারণ হয়।

সেতুর টোল প্লাজার মোটরসাইকেল বুথ ছাড়াও ৭টি বুথে টোল নিয়েও হিমশিম খেতে হচ্ছে। সকালে বেশি চাপের কারণে মোটরসাইকেল বুথ বাড়িয়ে দুটি করা হয়। তবে বেলা বাড়ার পর অন্য যান সামাল দিতে বাইকের বুথ আবার একটিতেই নামিয়ে আনা হয়।

তবে চলন্ত গাড়িতে টোল আদায়ে ১১ মাস আগে পরীক্ষামূলক শুরু হওয়া ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন সিস্টেম (ইটিসি) এখনো পুরোপুরি চালু করা যায়নি। তাই মিলছে না এর সুফল।

সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, ঈদে ঘরমুখো মানুষের নির্বিঘ্ন যাতায়াত নিশ্চিতের সব চেষ্টা চলছে। তবে ঈদের আগে ছুটির দিন হওয়ায় একযোগে বেশি যানবাহনের চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের সহকারী প্রকৌশলী (টোল) রাজন চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ঈদের ৫ দিনের ছুটির প্রথম দিনে স্বাভাবিকভাবেই চাপ বেশি। চাপ সামাল দেওয়ার নিরলস চেষ্টা চলছে।

গত বছরের ২০ এপ্রিল থেকে পদ্মা সেতুতে দ্বিতীয় দফায় বাইক চলাচল শুরু হয়। এর আগে ২০২২ সালের ২৬ জুন খুলে দেওয়া হলে বাইক দুর্ঘটনায় দুই যুবক নিহত হয়। এতে কর্তৃপক্ষ সেতু দিয়ে বাইক চলাচল নিষিদ্ধ করে। পরে অবশ্য আবার বাইক চলাচলের সুযোগ দেওয়া হয়।

একই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কেও। গাড়ির চাপ বেড়ে যাওয়ায় চলছে ধীরগতিতে। মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে থেমে থেমে চলছে গাড়িগুলো। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।

গতকাল সকালের দিকে গাড়ির চাপ কিছুটা কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা বাড়ছে। জুমার নামাজের পর গাড়ির চাপ তীব্র আকার ধারণ করেছে। মহাসড়কের উভয় লেনে একই দৃশ্য দেখা গেছে।

কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে শুরু করে পদুয়ার বাজার পর্যন্ত বেশ থেমে থেমে চলছে গাড়িগুলো। বেলা ১১টার দিকে চান্দিনা অংশে বেতন-বোনাসের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করেন গার্মেন্টশ্রমিকরা। ফলে ১০-১২ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে ঘণ্টা দুয়েক পর অবরোধ তুলে নিলে যানজট কমতে থাকে। তবে হঠাৎ গাড়ির চাপ বেড়ে যাওয়ায় ধীরগতিতে চলতে হয়।

দাউদকান্দি হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুল আলম, ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুরুল আলম এবং ময়নামতি হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার দৈনিক বাংলাকে বলেন, জুমার নামাজের পর মহাসড়কে গাড়ির চাপ বেড়েছে। চান্দিনায় শ্রমিকদের অবরোধের ফলে সৃষ্ট জটলা না থাকলেও গাড়ি যাচ্ছে ধীরগতিতে।

হাইওয়ে পুলিশ কুমিল্লা রিজিয়নের পুলিশ সুপার খাইরুল আলম দৈনিক বাংলাকে বলেন, যান চলাচল স্বাভাবিক করতে পুলিশের সমন্বিত ইউনিট কাজ করছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে যান চলাচল স্বাভাবিক হবে।

পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ঈদযাত্রায় নেই ভোগান্তি

ঈদযাত্রায় ভোগান্তি ছাড়া ফেরি-লঞ্চ পার হতে পাড়ছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যাত্রীরা। ঢাকাগামী পশুবাহী ট্রাক পারাপারও হচ্ছে নির্বিঘ্নে। ঘাটের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও যানজট এড়াতে মোতায়েন আছে বাড়তি পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য। ঈদ উপলক্ষে ছোট-বড় ফেরির সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে।

পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটের যাত্রীবাহী যানবাহন পারাপার বেশ কমে গেছে। কমেছে যাত্রী ভোগান্তিও। তবে ঈদ উপলক্ষে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যাত্রী, যানবাহন ও পশুবাহী ট্রাক নির্বিঘ্নে পারাপার করতে আগে থেকেই নানান প্রস্তুতি নিয়েছিল ঘাট কর্তৃপক্ষ।

এরই মধ্যে ঈদযাত্রায় পাটুরিয়া ঘাটে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বেড়েছে। তবে চাপ বাড়লেও কোনো রকম ভোগান্তি ছাড়াই ফেরি-লঞ্চ পারাপার হচ্ছে। যাত্রীবাহী বাস, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাসগুলো অনায়াসেই ফেরিতে উঠে যাচ্ছে। এতে স্বস্তিতে যাত্রী ও যানবাহন শ্রমিকরা।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) ডিজিএম খালেদ নেওয়াছ বলেন, ‘ঈদে ঘরমুখো যাত্রী ও যানবাহনগুলো নির্বিঘ্নে ও নিরাপদে পারাপারের জন্য ফেরির সংখ্যা বাড়িয়ে ২০টি করা হয়েছে। এ জন্য দুর্ভোগ ছাড়াই যাত্রী ও যানবাহনগুলো পারাপার হচ্ছে।’

পুলিশ সুপার মো. গোলাম আজাদ খান বলেন, ঘাটের শৃঙ্খলা রক্ষায় অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স কাজ করছে। পাশাপাশি পশুবাহী ট্রাকগুলো যেন ঘাটে কোনো ধরনের হয়রানি ছাড়া নির্বিঘ্নে ঢাকার কোরবানির হাটে যেতে পারে সে ব্যাপারে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।


‘বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল করেছ দান’

আপডেটেড ১৫ জুন, ২০২৪ ০০:০৩
সৈয়দ আফজাল হোসেন

ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। ঋতুচক্রের বৈচিত্র‍্য অনুযায়ী প্রতি দুই মাস পর পর ঋতুর পরিবর্তন হয়। এই নিয়মেই আষাঢ় ও শ্রাবণ দুই মাস বর্ষাকাল। সে হিসেবে আজ বর্ষাকালের প্রথম দিন- পহেলা আষাঢ়। আর বর্ষা ঋতুর প্রধান অনুষঙ্গ হচ্ছে বৃষ্টি। তাই তো কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার কবিতায় বর্ষাকে বরণ করেছেন এভাবে: ‘আবার এসেছে আষাঢ় আকাশ ছেয়ে, আসে বৃষ্টির সুবাস বাতাস বেয়ে’।

গ্রীষ্মের তীব্র তাপপ্রবাহের পরে আষাঢ়-শ্রাবণের অঝোর বারিধারা প্রকৃতিতে অনেকটা স্বস্তি বয়ে আনে। বৃষ্টির জলে অবগাহন করে মানব মনে, বিশেষ করে তরুণ-তরুণী ও কিশোর-কিশোরীদের মাঝে প্রাণের সঞ্চার ঘটে এবং আবেগ, অনুভূতি ও অফুরন্ত আনন্দের শিহরণ জাগে। মেঘের তর্জন-গর্জন, গুড়ুম গুড়ুম বজ্রধ্বনি, টিনের চালে রিমঝিম রিমঝিম বৃষ্টি পতনের শব্দ মানুষের মনকে যেন ছন্দময় করে তোলে। মেঘ আর রোদের খেলায় বর্ষায় বাংলার প্রকৃতিতে এক চমৎকার নৈসর্গিক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়!

এ সময় বাংলাদেশের নদ-নদী, খাল-বিল, পুকুর-ডোবাসহ অন্যান্য জলাশয় পানিতে টইটুম্বর হয়ে যায়। অথৈ জলে পরিপূর্ণ নদীর উথাল-পাথাল ঢেউয়ের মাঝে পালতোলা নৌকা চালানোর সময় মাঝিরা গলাছেড়ে মায়াবী সুরে গাইতে থাকে আবহমান বাংলার ভাওয়াইয়া-ভাটিয়ালি গান। যে গানের মধ্য দিয়ে তাদের জীবনের যত সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, বিরহ-বেদনার কথা ধ্বনিত হয়।

বর্ষার জলে পানকৌড়ির ডুবসাঁতারের লুকোচুরি খেলা, পুকুরপাড়ের ঝোপঝাড়ে লেজ দুলিয়ে ডাহুক পাখির তিড়িং-বিড়িং করে হেঁটে চলা, কুয়ার জলে অবিরাম কোলা ব্যাঙ ডাকার ঘ্যাঙর ঘ্যাঙর শব্দ, পেখম মেলে ময়ূরের মনোমুগ্ধকর নৃত্য যে কাউকেই বিমোহিত ও বিমুগ্ধ করে।

বর্ষা আর কদম ফুল যেন একে অপরের পরিপূরক। মনে হয় যেন কত শত ভালোবাসার অনুরাগে গাছে গাছে ফুটে উঠেছে কোমল-নরম তুলতুলে কদম ফুল। এ ছাড়াও এ সময় গ্রামবাংলার বিল-ঝিলে ফোটে কত না শাপলা-শালুক আর রঙিন পদ্ম ফুল।

বর্ষা আর বৃষ্টি কবিমনকে ভাবের আবেগে উদ্বেলিত ও রোমাঞ্চিত করে। কেননা, বর্ষা হচ্ছে সবচেয়ে আবেগময়, কাব্যময় ও প্রেমময় ঋতু। বিশ্বের প্রায় সকল কালের, সকল যুগের, সকল ভাষার কবির কবিতায় নানাভাবে বর্ষা বা বৃষ্টির বন্দনা করা হয়েছে। বাংলা সাহিত্যেও অন্য যেকোনো ঋতুর চেয়ে বর্ষার প্রভাব সবচেয়ে বেশি। বাংলা গল্প, উপন্যাস, নাটক, কবিতা, গান ও চিত্রশিল্পে বর্ষার রূপ-মাধুর্য ও সৌন্দর্য নানাভাবে বর্ণিত হয়েছে। এমনকি গ্রামবাংলার রমণীদের নকশিকাঁথার ফোঁড়ে ফোঁড়ে বর্ষার অনিন্দ্যসুন্দর ও অপরূপ রূপের চিত্র ফুটে ওঠে।

তবে বর্ষাকে নিয়ে যত সাহিত্য রচিত হয়েছে, তার অধিকাংশেরই মূল উপজীব্য হচ্ছে বিরহগাথা। বর্ষার বাদলধারার সঙ্গে আহত হৃদয়ের বোবাকান্না যেন ঝরে পড়ে বেদনাশ্রু হয়ে। আর তাই বর্ষাকে বিরহের কালও বলা হয়ে থাকে।

বাংলা সাহিত্যের প্রাণপুরুষ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে শুরু করে স্বভাব কবি গোবিন্দচন্দ্র দাস, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম, পল্লীকবি জসীম উদ্‌দীন এবং রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশসহ প্রায় সব কবিই বর্ষা দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছেন।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রিয় ঋতু ছিল বর্ষা। তাই তার কবিতা ও গানে বর্ষাকে উপস্থাপন করেছেন নানা আঙ্গিকে। অসংখ্য গান-কবিতায় মানবজীবনে বর্ষার চিরায়ত প্রভাবকে গভীর ব্যঞ্জনায় তুলে ধরেছেন। ‘এমন দিনে তারে বলা যায়/ এমন ঘনঘোর বরিষায়’ কিংবা ‘গগনে গরজে মেঘ, ঘন বরষা, কূলে একা বসে আছি, নাহি ভরসা’ অথবা ‘নীল নবঘনে আষাঢ় গগনে তিল ঠাঁই আর নাহি রে/ ওগো, আজ তোরা যাস নে ঘরের বাহিরে’- এসব কবিতায় তিনি বর্ষাকে চিত্রিত করেছেন আবেগ আর অনুভূতির মাধুর্য দিয়ে।

এ ছাড়াও ‘বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল করেছ দান/আমি দিতে এসেছি শ্রাবণের গান’- কবিগুরু এমনিভাবে গানে গানে বর্ষাকে অভিবাদন জানিয়েছেন। তার ‘বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর’ ছড়াটি পড়ে মনের অজান্তেই সবাই ফেলা আসা মধুর দুরন্তপনার শৈশবে ফিরে যায়।

‘বর্ষা বিদায়’ কবিতায় কাজী নজরুল ইসলাম লিখেছেন: ‘ওগো বাদলের পরী/ ব্যথা ক’রে বুক উঠিবে না কভু সেথা কাহারেও স্মরি?’ তিনি আরও গেয়েছেন: ‘বর্ষা ঋতু এলো এলো বিজয়ীর সাজে/ বাজে গুরু গুরু আনন্দ-ডমরু অম্বর মাঝে/(বাঁকা) বিদ্যুৎ তরবারি ঘন ঘন চমকায়।’

মাইকেল মধুসূদন দত্ত ‘বর্ষাকাল’ কবিতায় লিখেছেন: ‘গভীর গর্জন করে সদা জলধর/ উথলিল নদ-নদী ধরনীর উপর/ রমণী রমন লয়ে, সুখে কেলি করে/ দানবাদি দেব, যক্ষ সুখিত অন্দরে।’

বর্ষা বা বৃষ্টির সঙ্গে বিরহবিধুর মানবমনের আকুলতা ও অনুরাগের গভীরতার সম্মিলন ঘটিয়ে রচিত… ‘এই মেঘলা দিনে একলা ঘরে থাকে না তো মন/ কাছে যাবো কবে পাবো ওগো তোমার নিমন্ত্রণ’, ‘এমনি বর্ষা ছিল সেদিন/ শিয়রে প্রদীপ ছিল মলিন/ মনে কি পড়ে প্রিয়’, ‘ওগো বৃষ্টি আমার চোখের পাতা ছুঁইয়ো না/ আমার এত সাধের কান্নার দাগ ধুয়ো না’, ‘আষাঢ় শ্রাবণ মানে না তো মন/ ঝর ঝর ঝর ঝর ঝরেছে/ তোমাকে আমার মনে পড়েছে’ কিংবা ‘আজ এই বৃষ্টির কান্না দেখে মনে পড়লো তোমায় অশ্রুভরা দুটি চোখ’… গানগুলো সংগীতপিপাসু মানুষের মুখে মুখে প্রতিনিয়তই ধ্বনিত হয়।

কথাসাহিত্যিক হ‍ুমায়ূন আহমেদও বর্ষাকে নিয়ে কয়েকটি গান রচনা করেছেন। তার লেখা: ‘যদি মন কাঁদে তুমি চলে এসো এই বরষায়’ গানটিতে আবেগ, ভালোবাসা ও হৃদয়ের গভীর আকুলতা অনবদ্যভাবে তুলে ধরেছেন।

আষাঢ়ের প্রথম দিনটিকে প্রাচীন যুগের কবি কালিদাস অমর করে রেখেছেন তার অমর সৃষ্টি ‘মেঘদূতম’ কাব্যটির মাধ্যমে। সংস্কৃত ভাষায় রচিত মেঘদূত কাব্যের মূল সুর বিরহের। রামগিরি পাহাড়ে নির্বাসিত এক অভিশপ্ত যক্ষের প্রিয়াবিরহ এই কাব্যের মূল উপজীব্য।


৩৬ শতাংশ পুরুষ বয়স হলেও এখনো বিয়ে করেনি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বয়স হওয়ার পরও বিয়ে করেনি ৩৫.৮ শতাংশ পুরুষ। আর এ জন্যই দেশে নারীর তুলনায় অবিবাহিত পুরুষের সংখ্য ১৪ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে ২১ দশমিক ৭ শতাংশ নারী প্রাপ্তবয়স্ক হয়েও এখনো বিয়ে করেনি।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ‘বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস-২০২৩’-এর প্রকাশিত ফলাফলে এমন তথ্য উঠে এসেছে। সম্প্রতি বিবিএসের ওয়েবসাইটে জরিপ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।

অবিবাহিত পুরুষের সংখ্যা যেমন নারীর চেয়ে বেশি, তেমনি নারীর চেয়ে পুরুষের একাধিক বিয়ে করার হারও বেশি। একবারের বেশি বিয়ে করেছেন এমন পুরুষের হার প্রায় ৪ শতাংশ, আর নারীর ক্ষেত্রে এটি ১ শতাংশের বেশি।

বিপত্নীক হিসেবে ১ শতাংশের কিছু বেশি পুরুষ একা জীবনযাপন করছেন। অন্যদিকে নারীদের বিধবা হিসেবে জীবনযাপনের হার প্রায় ৯ শতাংশ।

পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, দেশে পুরুষদের প্রথম বিয়ের গড় বয়স ২৪ দশমিক ২ বছর। আর নারীদের ১৮ দশমিক ৪ বছর। প্রতি হাজার জনসংখ্যায় অভ্যন্তরীণ স্থানান্তরের ক্ষেত্রে পল্লীতে আগমনের হার ২০ দশমিক ৪ শতাংশ এবং শহরে আগমনের হার ৪৩ দশমিক ৪ শতাংশ। তবে মৃত্যু হারে এগিয়ে পুরুষ। ২০২৩ সালে প্রতি হাজারে পুরুষের মৃত্যুর হার ৬ দশমিক ১ শতাংশ। আর সেখানে নারীর মৃত্যুর হার ৫ দশমিক ৫ শতাংশ।

প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, দেশে প্রতি বর্গকিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্ব ১ হাজার ১৭১ জন। এ ছাড়া প্রতি হাজার জনসংখ্যায় স্থূল জন্মহার ১৯ দশমিক ৪, যা ২০২২ সালে ছিল ১৯ দশমিক ৮ শতাংশ।


ফজিলাতুন্নেছা হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রীর রুটিন চেকআপ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
 বাসস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গাজীপুরের কাশিমপুরের তেতুইবাড়িতে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতাল পরিদর্শন করেন এবং সেখানে তিনি নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান।

শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব মো. নাঈমুল ইসলাম খান গণমাধ্যমকে তথ্যটি নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আজ (গতকাল) সকালে হাসপাতালটি পরিদর্শন করেন এবং সেখানে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়েছেন।’

হাসপাতালে পৌঁছালে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক।

প্রধানমন্ত্রী রেজিস্ট্রেশনের জন্য নিজে হাসপাতালের কাউন্টারে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন ও চেকআপ ফি পরিশোধ করেন। প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দেশের প্রখ্যাত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহর তত্ত্বাবধানে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। অধ্যাপক আবদুল্লাহ এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।

পরে প্রধানমন্ত্রী হাসপাতালের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য, চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও নার্সদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং হাসপাতালের সার্বিক কার্যক্রম সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেন। এ সময় তিনি রোগীদের সঠিকভাবে চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও দেন।


চলে গেলেন মেজর জেনারেল আব্দুর রশীদ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বিশেষ প্রতিনিধি

বিশিষ্ট নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুর রশীদ (৭০) চলে গেলেন না ফেরার দেশে। শুক্রবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন। বাদ জুমা মিরপুর ডিওএইচএস কেন্দ্রীয় মসজিদে নামাজে জানাজা শেষে তাকে আর্মি কবরস্থানে দাফন করা হয়। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

কয়েক মাস আগে তিনি চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যান। সেখান থেকে দেশে ফিরে আসার পর তার স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে। এরপর তাকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দুই মাস চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

তিনি সেনাবাহিনীর একজন মেধাবী অফিসার হিসেবে পরিচিত ছিলেন। চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পর জেনারেল রশীদ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় টকশো-তে অংশ নিতেন। তার লেখা কলাম বিভিন্ন পত্রিকায় নিয়মিতভাবে প্রকাশিত হতো।

মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুর রশীদের মৃত্যুতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গভীর শোক জানিয়েছেন।


শুধু ১২ জনের কাছেই ট্রেনের ৫০০ টিকিট, বিক্রি হতো ফেসবুকে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ট্রেনের ৫০০ টিকিটসহ ১২ কালোবাজারিকে আটক করেছেন র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) সদস্যরা। অন্যের জাতীয় পরিচয়পত্র ও মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে এসব টিকিট কেটেছেন তারা, যা পরে চড়া দামে যাত্রীদের কাছে বিক্রি করা হতো। রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ের স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‌্যাব-৩ এর সিও লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. ফিরোজ কবীর। তিনি বলেন, অভিযান চালিয়ে র‌্যাব-৩ এমন দুটি চক্রের ১২ জনকে আটক করেছে। এর মধ্যে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের বেসরকারি ট্রেনের বিক্রয় প্রতিনিধিও রয়েছেন।

এসব কালোবাজারি আগামী ১০ দিনের প্রায় ৫০০ টিকিট কেটে রেখেছেন। সোহেল ও আরিফুল নামে দুটি চক্র ঠাকুরগাঁও এবং ঢাকা থেকে কালোবাজারি পরিচালনা করতেন। ফিরোজ কবীর বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতে তারা অভিযান চালান। ঢাকা থেকে ১০ জনকে আটক করেন তারা। আর দুজনকে ঠাকুরগাঁও থেকে আটক করা হয়েছে। আমরা গত রাতে অভিযান শুরু করি। এটি চলমান অভিযান ছিল। এটি দুই থেকে তিন ধাপে পরিচালনা করা হয়। ঢাকার কমলাপুর ও আশপাশের এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের।’

তিনি বলেন, এখানে দুই ধরনের চক্র রয়েছে। এক ধরনের চক্র অনলাইনে টিকিট বিক্রি শুরু হলে তা ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র ও মোবাইল নম্বর দিয়ে কেটে রাখত। পরে ফেসবুক পেজে বিজ্ঞাপন দিয়ে চড়া দামে বিক্রি করে। সফটকপি পাঠিয়ে দিয়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা বুঝে নেয়। র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, ‘মানিক ও আরেকজনের নাম বকুল। এদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি মানিক মূলত সোহেল নামে একজন ও ঠাকুরগাঁওয়ে অবস্থানকারী আবু, রায়হান ও আনিস নামে আরও একজনের সঙ্গে কালোবাজারি ব্যবসায় আসে। তাদের থেকে আগামী ১০ দিনের টিকিট পাওয়া যায়। এগুলোর হার্ডকপি ও সফট কপি রয়েছে। এর মধ্যে দিনাজপুরের একতা এক্সপ্রেসের টিকিটের দাম তিন হাজার টাকা করে বিক্রি করছে।’

ফিরোজ কবীর বলেন, ‘মানিক ও বকুলের মাধ্যমে আনিস ও রায়হানকে গ্রেপ্তার করা হয়। রায়হান একটি কম্পিউটারের দোকানে কাজ করে। সেখানে ভুয়া সিম ও জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে অনেক টিকিট কেটে নেন। এদের বড় একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ আছে। সেখানে চাহিদা ও অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা করা হয়।’ তিনি বলেন, রায়হান ও আনিস টিকিট পাঠাতেন সোহেল ও মানিকের কাছে। আর মানিক ও বকুল ফেসবুক পেজে বিজ্ঞাপন দিয়ে বিক্রি করতেন।


প্রধানমন্ত্রী দ্বিপক্ষীয় সফরে ২১ জুন ভারত যাচ্ছেন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

তিস্তাসহ দুই দেশের মধ্যে প্রবাহিত অভিন্ন নদীর পানি ভাগাভাগিসহ দ্বিপক্ষীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আলোচনার জন্য চলতি মাসেই আবারও দিল্লি সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আগামী ২১ ও ২২ জুন প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের বিষয়টি শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান নিশ্চিত করেছেন। ঢাকা ও দিল্লির কূটনৈতিক সূত্র জানায়, ভারতে লোকসভা নির্বাচনের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে জুনের তৃতীয় সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী দ্বিপক্ষীয় সফরে দিল্লি যাওয়ার বিষয়টি আগেই মোটামুটি ঠিক করা হয়। প্রধানমন্ত্রী ২১ জুন দিল্লি পৌঁছাবেন এবং পরেরদিন তিনি টানা তৃতীয়বারের মতো ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকে বসবেন। সফরের খুঁটিনাটি ঠিক করতে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা ইতোমধ্যে দুবার ঢাকা ঘুরে গেছেন।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, শেখ হাসিনার সফরে তিস্তাসহ দুই দেশের মধ্যে প্রবাহিত অভিন্ন নদীর পানি ভাগাভাগি, রেল, সড়ক ও নৌপথে আঞ্চলিক সংযুক্তির কার্যকর প্রসার, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সহযোগিতা ও দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের নানা দিক নিয়ে দুই নেতার মধ্যে আলোচনা হতে পারে। নরেন্দ্র মোদি টানা তৃতীয়বারের মতো ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ৯ জুন শপথ গ্রহণ করেন। শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এর আগে ৮ থেকে ১০ জুন ভারত সফর করেন শেখ হাসিনা।


সেবাই আমাদের উৎসব, সেবাই আমাদের আনন্দ: আইজিপি

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঈদে ঘরমুখো মানুষকে সেবা দেওয়ার জন্য পুলিশের প্রতিটি সদস্য সব সময় প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।

আজ শুক্রবার বিকেলে ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক পরিদর্শন শেষে চান্দনা চৌরাস্তা মোড়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

আইজিপি বলেন, ‘পুলিশের প্রতিটি সদস্য নিজের ঈদ পরিবার-পরিজনের সঙ্গে না করে দেশের সেবা, মানুষের সেবা, দেশের মানুষের নিরাপত্তা দিয়ে আমরা গর্ববোধ করি, আনন্দ উপভোগ করি। সেবাই আমাদের উৎসব, সেবাই আমাদের আনন্দ এই ব্রত নিয়ে ঈদে আমরা দায়িত্ব পালন করতে থাকি এবং মানুষকে নিরাপত্তা দিয়ে থাকি। ঈদের সময় সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে পবিত্র ঈদুল আজহা নিরাপদ ও উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপিত হবে। আমরা এ আশাই করছি।’

চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ঈদের ছুটিতে অনেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে ভ্রমণ করে থাকেন। এজন্য পর্যটকের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ মোতায়েন থাকবে। আর ট্যুরিস্ট পুলিশের চাহিদা অনুযায়ী জেলা পুলিশ ও মেট্রোপলিটন পুলিশ প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে।

তিনি বলেন, ঈদে যে সকল মানুষ ঈদ উদযাপন করতে গ্রামের বাড়িতে যাবেন তারা যেন নিজেদের বাসা বাড়ির সিসি ক্যামেরাগুলো সচল আছে কিনা তা ঠিক মতো কাজ করছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখেন। যে কোনো সমস্যার জন্য নিকটস্থ থানায় যোগাযোগ কিংবা প্রয়োজনে ৯৯৯ এ ফোন করেও পুলিশের সহায়তা পাওয়া যাবে। ঈদ উপলক্ষ্যে কোনো ব্যবসায়ী যদি বড় অঙ্কের টাকা-পয়সা পরিবহন করতে চান তাহলে তাদের কেউ পুলিশের সহায়তা নিতে পারেন।

আইজিপি বলেন, কোরবানির পশুর হাটগুলোতে নিরাপত্তা দিতে পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে। কোনো পশু নিয়ে গন্তব্যে যাওয়ার পথে যদি কেউ গাড়ি থামিয়ে চাঁদা দাবি করে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পরিবহন শ্রমিক ও চালকদের আইন মেনে চলতে এবং ফিটনেসবিহীন কোনো যানবাহন সড়কে না নামাতে পরিবহন মালিকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। এ ছাড়াও ঘরমুখো যাত্রীদের ঝুঁকি নিয়ে ট্রাক, পিকআপ বা অন্য কোনো অনিরাপদ যানবাহনে গন্তব্যে না যাওয়ার আহ্বান জানান আইজিপি।


আজ মধ্যরাত থেকে বন্ধ হচ্ছে পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে আজ মধ্যরাত থেকে বন্ধ হচ্ছে পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল। ট্রেনের সময়ানুবর্তিতা বজায় রাখতে এবং শিডিউল বিপর্যয় রোধে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

সম্প্রতি ঈদুল আজহা উপলক্ষে বাংলাদেশ রেলওয়ের নেওয়া কর্মপরিকল্পনা থেকে এসব তথ্য জানা যায়।

কর্মপরিকল্পনায় বলা হয়, ১৪ জুন রাত ১২টার পর থেকে ঈদের পরের দিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কনটেইনার ও জ্বালানি তেলবাহী ট্রেন ছাড়া অন্য সব পণ্যবাহী (গুডস) ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হবে। এ ছাড়া বন্ধ রাখা হয়েছে আন্তঃদেশীয় মিতালী এক্সপ্রেস, মৈত্রী এক্সপ্রেস ও বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল।

কর্মপরিকল্পনায় আরও বলা হয়, ঈদুল আজহার দিন বিশেষ ব্যবস্থাপনায় কতিপয় মেইল এক্সপ্রেস বা বিশেষ ট্রেন চলাচলের ব্যবস্থা করা হবে। তবে কোনও আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করবে না।

এদিকে, ঈদযাত্রার তৃতীয় দিন আজ। সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার হওয়াতে কিছুটা চাপ বেশি দেখা গেছে রেল স্টেশনে। নাড়ির টানে বাড়ি ফিরতে সড়ক আর নৌপথের মতো ট্রেনেও উপচে পড়া ভিড়।

এর আগে গত বুধবার (১২ জুন) থেকে ট্রেনে ঈদযাত্রা শুরু হয়েছে। এবার টিকিটবিহীন যাত্রী ঠেকাতে কমলাপুর রেলস্টেশনে বেশ কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।


সৌদিতে সড়ক দুর্ঘটনায় তিন বাংলাদেশি নিহত

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় তিন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) দুপুরে দেশটির আল আলিফ শহরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন, হাইমচর উপজেলার ৩ নম্বর দক্ষিণ আলগী ইউনিয়নের চরভাঙ্গা গ্রামের ইসমাইল ছৈয়ালের ছোট ছেলে সাব্বির, একই ইউনিয়নের বর্ডারফুল এলাকার জামাল চৌকিদাদের ছেলে সবুজ চৌকিদার ও ২ নম্বর আলগী দূর্গাপুর উত্তর ইউনিয়নের কমলাপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে রিফাত।

নিহত তিনজনই চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার বাসিন্দা। আজ শুক্রবার তাদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন ২ নম্বর আলগী দূর্গাপুর উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান পাটোয়ারী।

তিনি বলেন, নিহতরা সৌদি আরবের আল আফিফ শহরে কর্মরত ছিলেন। তাদের মরদেহ দেশে আনার জন্য যোগাযোগ করা হচ্ছে।


ঈদের দিন বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঈদের দিন সকালে দেশের বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ শাহিনুর ইসলাম জানান, ঈদের আগে ও পরে রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেটে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বেশি থাকবে। চট্টগ্রামে এই বিভাগগুলোর তুলনায় কিছুটা কম বৃষ্টি হবে। আর ঢাকাতে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে তবে তা খুব কম। ঢাকার মধ্যে টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আজকের পর থেকে ঢাকায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে যাবে।

আজ (১৪ জুন) শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘন্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারী অবস্থায় রয়েছে। এর প্রভাবে আজ রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়; চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায়; ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।

খুলনা বিভাগসহ রাজশাহী এবং পাবনা জেলাসমূহের উপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা কিছু কিছু জায়গা থেকে প্রশমিত হতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে।


ভাই, ‘কত নিল’

কোরবানির গরু কিনে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন এক ক্রেতা। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১৪ জুন, ২০২৪ ১৩:০৯
নিজস্ব প্রতিবেদক

কোরবানির পশু কিনে বাড়ি ফেরার পথে ‘ভাই কত নিল’র উত্তর দিতে দিতে প্রায় হাঁপিয়ে যান ক্রেতারা। একটু খারাপ লাগলেও ঈদের আমেজ এই কষ্টকে অনেকাংশে কমিয়ে দেয়।

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট। এরই মধ্যে অনেকেই গরু কিনতে হাটে যাচ্ছেন অনেকে।

আজ শুক্রবার ছুটির দিন হওয়াতে অনেকেই বেছে নিয়েছেন দিনটিকে হাটে পশু কিনতে যাওয়ার জন্য। কিনছেনও অনেকেও। গরু কিনে বাড়ি ফেরার সময় দাম নিয়ে প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে মধুর সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাদের।

সরেজমিনে কেরানীগঞ্জেরি একটি হাটে দেখা যায়, হাট থেকে মাঝারি সাইজের একটি গরু কিনে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন এক ক্রেতা। গরু দেখে আরেক ক্রেতা তাকে জিজ্ঞাসা করেন, ভাই কত দিয়ে কিনলেন?

ওই ক্রেতা জানান, কোরবানির ঈদ এলেই এই মধুর সমস্যায় পড়তে তাদের। গরু নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে জনে জনে ডেকে দাম জিজ্ঞেস করে। বিষয়টি মজার হলেও অনেক সময়ই দাম বলতে বলতে হাঁপিয়ে উঠতে হয়।

এদিকে, হাটের ইজারাদার কমিটির সদস্য মো. শাওন জানান, ট্রলারে ও ট্রাকে করে বিভিন্ন জেলা থেকে গরু আসছে। বেচাকেনা এখনও তেমন জমে না উঠলেও আজ (শুক্রবার) বিকেলের পর থেকে ভিড় বাড়বে।

এর আগে, গত বুধবার থেকে ঢাকার দুই ‍সিটি করপোরেশনে আনুষ্ঠানিকভাবে পশুর হাট বাসবার ঘোষণা আসলেও অনেক জায়গায় দেখা গেছে নির্ধারিত সময়ের আগেই বসেছে পশুর হাট। তবে হাটগুলোতে সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের তৎপরতা চোখে পড়ার মতো।

হাটগুলোতে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যাচ্ছে এবার মাঝারি আকারের গরুর দিকে ঝুঁকছে মানুষ। এ বছর পশুর ব্যাপক জোগান থাকাতে দ্রুত গরু বিক্রি করতে না পারলে অনেক বেপারিকেই হয়তো লোকশানের মুখ দেখতে হতে পারে।


হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

মক্কায় শুরু হয়েছে পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা। পাঁচ দিনের হজে ‘লাব্বাইক আল্লাহুমা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখর হবে মিনা, আরাফাতের ময়দান ও মুজদালিফা।

হিজরি ১৪৪৫ সালের জিলহজ মাসের ৮ তারিখ আজ। আরবি বর্ষপঞ্জিকার শেষ মাস জিলহজের ৮ তারিখ থেকে শুরু হয় হজ। এরপর ৯ জিলহজে অবস্থান করতে হয় আরাফাতের ময়দানে। আর ১০ জিলহজে পশু কোরবানি করেন হাজিরা। পশু কোরবানি শেষে আরও দুদিন থাকে হজের বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা। হজ সম্পন্ন করতে সব মিলিয়ে পাঁচদিন সময় লাগে।

প্রথম দিন হজযাত্রীরা (পুরুষ) সেলাই ছাড়া ইহরাম বা সাদা কাপড় পরেন। অপরদিকে নারীরা ঢিলেঢালা পোশাক পরেন।

ইহরাম পরার পর দলে দলে হাজিরা মিনায় যান। মিনায় হাজিরা ৮ জিলহজ জোহর থেকে ৯ জিলহজ ফজরসহ মোট পাঁচ ওয়াক্ত আদায় করবেন। ফজরের নামাজ আদায় করার পর তারা রওনা দেবেন ১৪ দশমিক ৪ কিলোমিটার দূরত্বের আরাফাতের ময়দানের উদ্দেশ্যে।

আরাফাতের দিবসকে ধরা হয় মূল হজ হিসেবে। মিনা থেকে ৯ জিলহজ ভোর থেকেই হজযাত্রীরা ‘লাব্বাইক আল্লাহুমা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে আরাফাতের ময়দানে সমবেত হবেন। তাদের সমস্বরে উচ্চারিত ‘লাব্বাইক আল্লাহুমা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত হবে আরাফাতের আকাশ বাতাস। দুপুরে হজের খুৎবা শুনবেন তারা। তারপর এক আজানে হবে জোহর ও আসরের নামাজ। সূর্যাস্তের পর হজযাত্রীরা আরাফাতের ময়দান ত্যাগ করে যাত্রা করবেন নয় কিলোমিটার দূরের মুজদালিফার পথে। সেখানে আবার তারা এক আজানে আদায় করবেন মাগরিব ও এশার নামাজ। এ রাতে মুজদালিফায় তারা খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করবেন।

এসময় তারা মুজদালিফা থেকে পাথর সংগ্রহ করবেন জামারায় প্রতীকী শয়তানকে নিক্ষেপের জন্য। এরপর শনিবার সকালে সূর্যোদয়ের পর জামারায় প্রতীকী বড় শয়তানকে লক্ষ্য করে ছোট সাতটি নুড়ি পাথর নিক্ষেপ করবেন হজযাত্রীরা। এরপর আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পশু কোরবানি করবেন। কোরবানি করে মাথা মুণ্ডন করবেন। এহরাম খুলে পরবেন সাধারণ পোশাক। আবার কাবাঘর তাওয়াফ করবেন। সাফা-মারওয়ায় সাতবার সাঈ (চক্কর) করবেন। এরপর আবার ফিরে যাবেন মিনায়। এর পরদিন এবং তার পরদিন অর্থাৎ টানা দুদিন দ্বিতীয় ও ছোট শয়তানকে পাথর মারার মধ্য দিয়ে শেষ হবে হজের আনুষ্ঠানিকতা।

মিনার আনুষ্ঠানিকতা শেষে হাজিরা মক্কায় ফিরে যান এবং শেষবারের মতো কাবা তাওয়াফ করেন। যা ‘বিদায়ী তাওয়াফ’ নামেও পরিচিত।

নিজ বাড়িতে বা দেশে ফেরার আগে বেশিরভাগ হাজি মদিনায় হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের (সা.) রওজা মোবারক জিয়ারত করেন।


banner close